চরফ্যাসন প্রতিনিধি ॥ চরফ্যাসনের দক্ষিণ আইচা থানার নজরুল নগর ইউনিয়নে অটো বোরাকের ব্যাটারী চুরির অপবাদ দিয়ে হাসান(১৫) নামের এক কিশোরকে হাত মুখ বেঁধে রাত ভর নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। নির্যাতনকারীদের কবল থেকে সন্তানকে বাঁচাতে গেলে বাবা ,মা এবং ভাইকেও মারধরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। সোমবার রাতে দক্ষিণ আইচা থানার নজরুল নগর ইউনিয়নে ৪ নং ওয়ার্ডে এই নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে স্থানীয়রা রাত ২টায় নির্যাতিতদের উদ্ধার করে গতকাল মঙ্গলবার সকালে চরফ্যাসন হাসপাতালে ভর্তি করেন। এঘটনায় এসংবাদ লেখা পর্যন্ত মামলা দায়ের করা হয়নি।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ভিক্টিম কিশোরের বাবা আমির হোসেন মাঝি জানান, সোমবার রাতে ৯টায় তার ছেলে হাসান বাড়ি ফেরার পথে স্থানীয় পেশাদার কিলার মিন্টিজ, সেকান্তরের ছেলে আবু কালাম, ও সিরাজুল ইসলামের ছেলে সালাম, করিম জমাদারের ছেলে মালেক জমাদার আমার ছেলেকে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে যায়। তাকে স্থানীয় ভক্তির বাজার সংলগ্ন একটি পরিত্যক্ত বাড়িতে হাত মুখ বেঁধে আটক রাখেন এবং অটো বোরাকের ব্যাটারী চুরির অপবাদ তুলে তাকে নির্যাতন করে। কিশোরকে চাকু ঠেকিয়ে তার কাছ থেকে চুরির স্বীকারোক্তি নেন। তাদের নির্যাতনে বাধ্য হয়ে তার ছেলে হাসান স্বীকারোক্তি দেন। কিন্তু আদৌ কোন চুরির সাথে সে জড়িত ছিলেন না।একপর্যায় মোবাইল ফোনে আমাদেরকে খবর দেয়। আমরা ঘটনাস্থলে পৌঁছলে মিন্টিজ , সালাম , কালাম, মালেক জমাদার আমাদের কাছে ১ লক্ষটাকা দাবী করেন। টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে তারা আমাকে ও আমার স্ত্রী আছিয়া ,বড় ছেলে তরিকুলকে আটক রেখেও মারধর করে। আমার স্ত্রী ৯৯৯ নাইন নম্বরে ফোন করে বিষয়টি জানান। সংবাদ পেয়ে স্থানীয় গ্রামপুলিশ সোহরাব আমাদেরকে উদ্ধার করেন । পরে রাতেই স্থানীয় ইউপি সদস্যসহ গ্রামবাসীরা বিষয়টি নিয়ে সমঝোতায় বসেন। ঘটনার সত্যতা না পেয়ে আমাদেরকে বাড়িতে পাঠিয়ে দেন। সকালে আমারা চরফ্যাসন হাসপাতালে ভর্তি হই। ভিক্টিম কিশোরের মা আছিয়া জানান, এই চক্র ইতিপুর্বে ও তার ছেলেকে মিথ্যা চুরির অপবাদ দিয়ে আটক করে ৪০ হাজার টাকা দাবী করেন। নিরুপায় হয়ে হালের গরু বিক্রি করে তাদের দাবীকৃত টাকা পরিশোধ করে ছেলেকে ছাড়িয়ে নেন।
স্থানীয় সুত্র জানায়, মিন্টিজ পেশাদার খুনি তারা বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। সে পলতক আসামী। মিন্টিজ, আবদুস সালাম ও আবু কালাম মিলে এলাকায় মাদকসহ নানান অপরাধের স্বর্গরাজ্য গড়ে তুলেছেন। এই চক্র এলাকায় নানান অপরাধমুলক কার্যকলাপে জড়িত আছেন। মিন্টিজ পেশাদার কিলার হওয়ায় হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে সাহস করেন না।
গ্রামপুলিশ সোহরাব জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে ওই কিাশোর হাসানকে হাত বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার করি। এবং বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য সমঝোতার চেষ্টা করেন কিন্তু কোন সমঝোতা হয়নি পরে তারা উভয়পক্ষ থেকে লিখিত নিয়ে নির্যাতিত কিশোরসহ তার পরিবারের সদস্যদের বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। তবে ওই কিশোর চুরির সাথে জড়িত থাকার সত্যতা মিলেনি। ঘটনার পরপরই অভিযুক্তরা আত্মগোপনে থাকায় তাদের বক্তব্য জানাযায়নি। দক্ষিণ আইচা থানার ওসি হারুন অর রশিদ জানান, ঘটনাটি ভিক্টিম পরিবারের কেউ আমাদেরকে জানায়নি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে এখন লিখিত অভিযোগ পাইনি । অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Leave a Reply